• সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

  • || ২৩ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ছাগলকাণ্ডে তোলপাড়: ভাইরাল ইফাত আসলে কে?

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৪  

কোরবানির পশুর হাটে ভাইরাল হওয়া অনেক পশুর মধ্যে এখন অনলাইনে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে ১৫ লাখ টাকার ছাগল। কোরবানি শেষ হলেও থামছে না এই ছাগলকাণ্ড। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো তোলপাড় সেই ছাগলকাণ্ড। এছাড়া ইফাতের আসল পরিচয় নিয়েও জনমনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

ছাগল কিনে ভাইরাল হওয়া মুশফিকুর রহমান ইফাতের বাবা হিসেবে উঠে আসে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের নাম। যদিও ইফাতের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কই নেই বলে অস্বীকার করেছেন তিনি।

ইফাতের ভাষ্য, তিনি আসলে ছাগলটি কেনেননি। সাদিক এগ্রোর মালিকের কথামতো ছাগল কেনার অভিনয় করেছেন। সাদিক এগ্রো বলছে, ছাগলটি কেনার জন্য ১ লাখ টাকা বায়না দিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত হওয়ার পর আর কেনেননি তারা।

এ ঘটনার সূত্রপাত হয় ঈদের সপ্তাহ খানেক আগে। ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগল ১২ লাখ টাকায় কিনে ভাইরাল হন ইফাত নামে এক যুবক। পরে জানা যায় তার বাবা রাজস্ব কর্মকর্তা। সরকারি চাকরি করে কীভাবে এতো টাকা দামের ছাগল কিনলেন তা নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।

ছাগলকাণ্ডের বিষয়টি জানতে বুধবার (১৯ জুন) ধানমন্ডিতে ইফাতের বাসায় যায় সময় সংবাদ। ধানমন্ডির ৮ নম্বর রোডের ইমপেরিয়াল সুলতানা ভবনের পঞ্চম তলায় থাকেন ইফাত। তার ফ্ল্যাটে গিয়েও পাওয়া যায়নি কাউকে।

ইমপেরিয়াল সুলতানা ভবনের নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ইফাত কয়েকদিন আগে চলে গেছেন। তারা কয় ভাই-বোন আমি জানি না। মঙ্গলবার বাসা থেকে বের হয়েছে এরপর আর আসেননি।
সন্ধ্যার দিকে টেলিফোনে ইফাত জানান, তিনি ছাগলটি কেনেননি, সাদিক এগ্রোর মালিকের কথামতো শুধু ছাগল কেনার অভিনয় করেছেন।

ইফাত আরও বলেন, সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান ভাই আমার খুব কাছের। তিনি আমাকে বলেন খাসিটাকে একটা থাপ্পর দাও, তাহলে দেখ সে কি করে, এরপর আমি এটি করেছি। তার কথামতো আমি কাজটি করেছি। তারপর ছবি তুলেছি এবং বলেছি হ্যাঁ, খাসিটি আমি কিনেছি। আসলে এটি কিনিনি বা কেনা হয়নি। আমার বাসাতেও আনা হয়নি।

তাহলে সত্যিটা কী? সাদিক এগ্রোতে গিয়ে ছাগলটিকে বাধা অবস্থায় দেখা যায়। সাদিক এগ্রো বলছে, ইফাত ছাগলটি কেনার জন্য ১ লাখ টাকা বায়না দিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার পর আর নেননি।

এরপর ইফাতের কথিত বাবা রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি দাবি করেন, যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেখানে থাকা ওই যুবককে তিনি চেনেনও না। তার একমাত্র ছেলের নাম আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব।

রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, আমি নিজেও আর্শ্চয হয়েছি, এমনভাবে ট্রোল হচ্ছে, যেটা আমার পরিবারে জন্য ক্ষতিকর। আমার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে এখন দেশে আছে। কিন্তু জীবনে দামি গরু কেনা তো দূরের কথা, একটু ভিন্ন রকমের ছেলে সে। এসব কাজের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আপনারা খোঁজ নিলে জানবেন।

তাহলে কীভাবে আপনার নাম এখানে এলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে। এতে আমি বিব্রত। আমি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহায়তা চেয়েছি। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপে নেব।

তবে তথ্য মতে, এনবিআরের সদস্য মতিউর দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর নাম লাইলা কানিজ। যিনি বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান মুশফিকুর রহমান ইফাত। ফেসবুকেও বাবা মতিউর রহমানের সঙ্গে ইফাতের যুগলবন্দি বেশ কয়েকটি ছবিও দেখা গেছে।